Wednesday, August 27, 2014

স্বপ্নে স্মৃতিরা

ধু ধু প্রান্তরে, কোন এক দু:সহ গরমের দিনে
                               মাঠের মাঝে হঠাৎ একটা ঘন সবুজ গাছ যখন দু'দন্ডের  ছায়া দেয়
শরীর মন জুঁড়ানো সে অনুভূতি সঙ্গে থাকে বহুদিন ।
                                                    সবুজ সতেজ সে স্মৃতি,
                                                                                আলাপে ফেরে বারবার, বারবার, বারবার।


এক মরসুমে, সাজানো বাগানের উজ্বল ফুলের মাঝে
       বেড়ার ধার বেয়ে ওঠা লতানো ফুলটির  সৌরভ,
                                                                         কি জানি কি মায়াতে বাঁধে !
হালকা  সে মায়াবী রঙের ফুলটির কথা স্মৃতিতে,
                                                            আলাপে ফেরে বারবার, বারবার, বারবার।


মনে পড়ে, কোন এক ভোরে  দূর থেকে ভেসে আসা আহীর ভৈরব
                                                                                       সুরে সুরে ভরে ছিল মন ।
 স্থান কাল পাত্র মনে নেই কিছুই,
                                      শুধু স্মৃতিতে আলাপে ফিরে ফিরে আসে সে সকাল,
                                                              আর সেই আহীর ভৈরব বারবার, বারবার, বারবার।

                                                                   ভালো থেকো স্বপ্নের স্মৃতিরা আমার।


                                                                                                                                   জয়শ্রী দাশগুপ্তা ।


Monday, May 12, 2014

অপত্য



অপত্য 

মা, এক সমুদ্র ভালবাসা
মা, এক সমুদ্র নিরাশাতে আশা ।

উধাল ঢেউযে ছোট্ট তরী দিশেহারা 
তখনও তো তোমার স্নেহে মাতোয়ারা
সঙ্গে যদি নাও থাকো তবু সদাই পাশে পাশে
সূদুর থেকে ভালোবাসার পরশ আসে ।

আমার ও তো ইচ্ছে করে ভালবাসার সাগর হতে
তোদের নিয়ে জীবনটাকে ভরিয়ে দিতে
যতই আসুক ঝড় ঝঞ্ঝা আকাশ কালো
মা যে তোদের সঙ্গে আছে, থাকিস ভালো
থাকিস ভালো ।। 


Jayasri

Thursday, January 16, 2014

মানুষ যখন

এখন তুমি শোকশূণ্য কারণ শোক ভাসিয়ে দিয়েছে তোমায়
এখন তুমি  ভয়শূণ্য কারণ ভয় ছেড়ে গেছে তোমায়
এই অনুভুতি শূণ্য অবস্থা অপ্রাকৃতিক
এতে ভেসে যেয়োনা ।

জীবন তোমার জন্য অপেক্ষাতে
প্রকৃতির সাজানো বাগানে অভিষেকের তোড়জোড়
তোমার জন্যই-
কেউ কাঁদছে, পাশে থেকো
কেউ  ভাঙছে,  পাশে থেকো
তলিয়ে যাচ্ছে প্রিয়জন, মানুষ  - পাশে থাকো  - হাত ধরো
পাশে থাক বন্ধু হয়ে,
 পাশে থাক মানুষ হয়ে মানুষেরই  পাশে ।
                                                         জয়শ্রী দাশগুপ্ত 

Tuesday, November 12, 2013

বহতা

কালচার প্লেটে কোষেদের এক থেকে বহুর ধারাপাত 
বানাতে  বানাতে যখন 
খুশীতে মত্ত হয়ে প্রায় ভেবে বসি 
আমিও তো বানিয়ে তুলতে পারি জীবন 
এক থেকে দুই, দুই থেকে এক কলোনী।

তখনই, জীবন জাগিয়ে তোলে  আমায় 
আনন্দের ভাসমান শূন্য  থেকে আঁছড়ে নামায় বাস্তবের শক্ত মাটিতে ।
তর্জনী তুলে বলে " এত ক্ষুদ্রতায় বেঁধো না আমাকে  
আমাকে ধরা যায়না পাত্রে - আমি যে সততই বহতা"।

এক বিন্দু থেকে শুরু এক অশেষে  তাঁর ছুটে চলা
এরই মাঝে কিছু কিছু জীবন এমন ভাবে ছুঁয়ে  যায় তোমাকে, আমাকে, তাঁদেরকে  ওঁদেরকে                                                                           আরো অনেক অনেককে 
দুকূল ভাসিয়ে তার ভালবাসা যেন জ্বালায় আলো 
আনন্দের সে আলোয় উদ্ভাসিত - বিকশিত 
নৃত্যরত  এক জীবন 
সে আলোর জোয়ারে ভেসে যাই আমরা - ভেসে যায় শোক 
রয়ে যায় শুধু স্মৃতির জলছবি, 
শোক  মুঁছতে পারে না তাকে।
                                                জয়শ্রী দাশগুপ্ত 

Monday, June 10, 2013

বিদায়

তোমার তোলা তর্জনী ফিরিয়ে দিয়ে 
আমি ফিরে যাচ্ছি ।

তোমার ভ্রুকুটিও  ফিরিয়ে দিয়ে 
আমি ফিরে যাচ্ছি ।

তোমার কাঁটা আর বিঁধবে না তো আমায় 
পিছন ফিরে আর দেখা কখনো না কখনো না 
কালো ধোঁয়ায় আর ঢাকে না পথ -
তবু কেন আঁধার করে আকাশ ঢেকে দিলে ?

সব ফিরিয়ে  দিয়ে ফিরে যাচ্ছি আমি-

বিদায় বেলায় তোমার সাথে দেখা, রইলো শুধু বাকি  ।





Sunday, May 12, 2013

matri dibas

মাতৃত্ব এক বহতা নদীর নাম
পরম্পরা থেকে পরম্পরা সতত গতিময় স্রোত

দ্বায়িত্বের এ ভার বড় ভারী,
চোখ বাধা তরুণী তুলাদণ্ডে স্নেহের হিসাব
দুজন দরজার দুদিকে দাঁড়িয়ে মুখোমুখি
                                                সন্তান ও আমি ।
জোছনায় ভেসে যায় সমস্ত প্রান্তর
মা বুঝি এখনো ভাবে "কেমন আছিস"...
                                              এ ভাবে শুধু মাকে মনে পড়ে বড়ো আজ
                                                                                   বুঝি কালও 
                                                                                                                                                                           বুঝি আগামীতেও 
                                                                                                                            যতদিন এখানে আছি ।                                                                         

Wednesday, August 15, 2012

স্বাধীনতার দিনে

প্রতি স্বাধীনতার দিনে আমার মাকে বড়ো  মনে পরে।
ছোটোবেলার স্মৃতিতে দিনটা ছিল আনন্দেরই, রোদ উজ্জ্বল ঝকঝকে ।
বাবার হাত ধরে পতাকা নারতে নাড়তে মিষ্টি কিনে, ভাই আর আমি বাড়ি ফিরছি,
এই তো যেন সে দিনের কথা ।
সে ছবিতে শুধুই  সুখ, শুধুই খুশী, শুধুই হাসি খেলা কত শত রঙের  গাঁথা  মালা।

আমার মা  ভয়াবহ ৪৭এর অনেক আগেই এদিকে চলে এসেছিলেন, আপাতভাবে কাঁটা ছেড়ার আঁচ লাগেনি তাঁদের  গায়ে  ।
তখন নতুন বউ হয়ে এক অজানা শহরে শ্বশুরঘর করতে আসা সবে কৈশোর পেরোনো সেই লাজুক মেয়েটি কে হয়ত রোমাঞ্চই  দিতো  এই পারাপার।
বারবার দুধসাদা গ্রামে ফিরে গিয়ে সেই আদরিনী মেয়ে ভালবাসায়  ভাসতে  ভাসতে এপারের গল্প করার মধ্যে যেন ছিলো  অশেষ স্বর্গসুখ।

১৫ই আগস্ট এলেই মায়ের চোখের কোন  কেন জল চিকচিক করত - অনেক অনেক দিন তা বুঝিনি।

এখন বুঝি, ওই দিন দুধশা নদীর দুকূল ছাপিয়ে আসতো জোয়ার
সেই নদীতে মন খারাপের ঘন কালো কুয়াশায় হারিয়ে যেত এক মযুরপঙ্খী নাও।
সাজান সব রাজপাট পরে থাকলো যেমন তেমন,
কাঁটাতারের বেঁড়া পেরিয়ে আর কখন বড় হাউলিতে হবে না দ্বিরাগমন ।
দূর্গা দালানে কোজাগরী আল্পনা আর কখনও না, কখনও না,
খান্ডব দহনের আগুনে পুরে ছাই সব ছোট ছোট সুখ
দম বন্ধ করা ধুলোর ঝড়ে  উল্টোপালটা  লন্ডভন্ড হারিয়ে গেল
                                  অতি আদরের কত কত, কত  শত মুখ ।

প্রত্যেক স্বাধীনতার দিনে মাকে ডাক পাঠাতো সেই নদী, সেই দূর্গা দালানে সেই হারিয়ে যাওয়া মুখেরা
আর আমার সদাহাস্যময়ী মা হয়ে যেত এক জল টলটল নদী ।

আজ আমাকে স্বাধীনতার দিনে সুদুর থেকে ডাক পাঠায় তোমাদের আদরের নৌকা, ডাক পাঠায় সংকেতে দূরভাষে ২৫শে , ২২শে -০৩৩এ
আর শুধু আমার মাকে  মনে পরে, শুধু মাকে  মনে পরে।